আঁটোসাঁটো বা ভুল সাইজের ব্রা পরে থাকলে কি স্তন ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে? কেউ বলেন আন্ডারওয়্যার ব্রা ‘টক্সিন’ আটকে দেয় শরীরে। কেউ আবার বলেন, দিনে-রাতে একটানা পরে থাকলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ। এমন গুজব নয়ের দশক থেকেই ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ সব নিছকই ভ্রান্ত ধারণা।
কোথা থেকে শুরু এই মিথ?
এই ধারণার সূত্রপাত ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একটি বই থেকে 'Dressed to Kill', লেখক সিডনি রস সিঙ্গার ও সোমা গ্রিসমাইজার। তাঁরা অনুমান করেছিলেন, আঁটোসাঁটো ও আন্ডারওয়্যার ব্রা স্তনের লিম্ফ্যাটিক ফ্লো বাধা দিতে পারে, যার ফলে শরীরে ‘টক্সিন’ জমে গিয়ে ক্যানসার হতে পারে। এটি কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে লেখা হয়নি, ছিল নিছক একটি অনুমান। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এই তত্ত্বই ছড়িয়ে পড়ে, রটে যায় সত্যি বলে।
কী বলছে গবেষণা?
২০১৪ সালে সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার একটি বড় আকারের গবেষণা চালায়, যাতে ১,৫০০-রও বেশি মহিলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাঁদের মধ্যে অনেকেই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ফলাফল? কোনও ভাবেই ব্রা পরা ও স্তন ক্যানসারের মধ্যে কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। না ব্রার ধরন, না তার টাইটনেস, না পরার সময়কাল, কিছুতেই ক্যানসার সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়েনি।
গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ লু চেন বলেন, “আমাদের গবেষণায় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গে ব্রা পরার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।” এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছে আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও ক্যানসার কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া, কোনও প্রতিষ্ঠানই ব্রা এবং ক্যানসারের মধ্যে সম্পর্কের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি খুঁজে পায়নি।
চিকিৎসকদের মত কী?
এমডি অ্যান্ডারসন ক্যানসার সেন্টারের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডঃ থেরিজ বিবার্স সোজাসাপ্টা বলেন, “আন্ডারওয়ায়ার ব্রা পরলে স্তন ক্যানসার হয়— এমন কোনও প্রমাণ নেই। স্তন ক্যানসার হয় কোষীয় স্তরে, তার সঙ্গে ব্রার ওয়্যার বা চাপের কোনও সম্পর্ক নেই।”
মেমোরিয়াল কেয়ার ব্রেস্ট সেন্টারের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডঃ হোমায়ুন সানাতি জানান, “যদি ব্রা সত্যিই স্তনের টিস্যুতে কোনও বাধা সৃষ্টি করত, তবে টিউমার সাধারণত স্তনের বাইরের দিক নয়, ভিতরের অংশেই দেখা যেত। বাস্তবে তা হয় না।”
তা হলে এই ভুল ধারণা কেন?
চিকিৎসকরা মনে করেন, এর প্রধান কারণই হল মহিলাদের ব্রা পরার অভিজ্ঞতা। অনেকেই ভুল মাপের ব্রা পরেন, যা অস্বস্তি তৈরি করে। শরীরে দাগ, কাঁধে দাগ, সব মিলিয়ে একটা বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি হয় ভয়। তাতে জুড়ে যায় ইন্টারনেটের ভুল তথ্য ও হোয়াটসঅ্যাপের গুজব।
ভুল ব্রা পরলে কী কী ক্ষতি করতে পারে?
ব্রা ক্যানসার না বাড়ালেও, ভুল মাপের ব্রা ঘাড়-ব্যথা, পিঠের ব্যথা, কাঁধে দাগ ইত্যাদি সমস্যার জন্ম দিতে পারে। ব্লুম উইমেনস ক্লিনিকের সিনিয়র গাইনোকলজিস্ট ডঃ প্রিয়া আহুজা বলেন, “ব্রা যদি ঠিকঠাক সাপোর্ট না দেয়, তাহলে তা শরীরের গঠন, ভঙ্গিমা সব কিছুর উপরেই প্রভাব ফেলে।”
কী কী কারণে স্তন ক্যানসার হয়?
ডাক্তাররা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, স্তন ক্যানসারের প্রকৃত ঝুঁকিগুলির দিকে নজর দিন:
১. বয়স এবং আগে যদি পরিবারে কারও হয়
২. BRCA1/BRCA2 জিনের মিউটেশন
৩. অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু বা দেরিতে মেনোপজ
৪. স্থূলতা এবং কম চলাফেরা
৫. অ্যালকোহল সেবন
৬. হরমোন থেরাপি
আন্ডারওয়ায়ার ব্রা পরা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই— যদি তা আরামদায়ক হয়। কিন্তু যদি চামড়ায় দাগ ফেলে, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে বা অস্বস্তি হয়, তাহলে সেটি বদলে নেওয়াই ভাল। কারণ সেটা ক্যানসারের জন্য নয়, আপনার নিজের স্বস্তির জন্য। স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ার বদলে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলুন।
কোথা থেকে শুরু এই মিথ?
এই ধারণার সূত্রপাত ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একটি বই থেকে 'Dressed to Kill', লেখক সিডনি রস সিঙ্গার ও সোমা গ্রিসমাইজার। তাঁরা অনুমান করেছিলেন, আঁটোসাঁটো ও আন্ডারওয়্যার ব্রা স্তনের লিম্ফ্যাটিক ফ্লো বাধা দিতে পারে, যার ফলে শরীরে ‘টক্সিন’ জমে গিয়ে ক্যানসার হতে পারে। এটি কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে লেখা হয়নি, ছিল নিছক একটি অনুমান। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এই তত্ত্বই ছড়িয়ে পড়ে, রটে যায় সত্যি বলে।
কী বলছে গবেষণা?
২০১৪ সালে সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার একটি বড় আকারের গবেষণা চালায়, যাতে ১,৫০০-রও বেশি মহিলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাঁদের মধ্যে অনেকেই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ফলাফল? কোনও ভাবেই ব্রা পরা ও স্তন ক্যানসারের মধ্যে কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। না ব্রার ধরন, না তার টাইটনেস, না পরার সময়কাল, কিছুতেই ক্যানসার সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়েনি।
গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ লু চেন বলেন, “আমাদের গবেষণায় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গে ব্রা পরার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।” এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছে আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও ক্যানসার কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া, কোনও প্রতিষ্ঠানই ব্রা এবং ক্যানসারের মধ্যে সম্পর্কের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি খুঁজে পায়নি।
চিকিৎসকদের মত কী?
এমডি অ্যান্ডারসন ক্যানসার সেন্টারের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডঃ থেরিজ বিবার্স সোজাসাপ্টা বলেন, “আন্ডারওয়ায়ার ব্রা পরলে স্তন ক্যানসার হয়— এমন কোনও প্রমাণ নেই। স্তন ক্যানসার হয় কোষীয় স্তরে, তার সঙ্গে ব্রার ওয়্যার বা চাপের কোনও সম্পর্ক নেই।”
মেমোরিয়াল কেয়ার ব্রেস্ট সেন্টারের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডঃ হোমায়ুন সানাতি জানান, “যদি ব্রা সত্যিই স্তনের টিস্যুতে কোনও বাধা সৃষ্টি করত, তবে টিউমার সাধারণত স্তনের বাইরের দিক নয়, ভিতরের অংশেই দেখা যেত। বাস্তবে তা হয় না।”
তা হলে এই ভুল ধারণা কেন?
চিকিৎসকরা মনে করেন, এর প্রধান কারণই হল মহিলাদের ব্রা পরার অভিজ্ঞতা। অনেকেই ভুল মাপের ব্রা পরেন, যা অস্বস্তি তৈরি করে। শরীরে দাগ, কাঁধে দাগ, সব মিলিয়ে একটা বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি হয় ভয়। তাতে জুড়ে যায় ইন্টারনেটের ভুল তথ্য ও হোয়াটসঅ্যাপের গুজব।
ভুল ব্রা পরলে কী কী ক্ষতি করতে পারে?
ব্রা ক্যানসার না বাড়ালেও, ভুল মাপের ব্রা ঘাড়-ব্যথা, পিঠের ব্যথা, কাঁধে দাগ ইত্যাদি সমস্যার জন্ম দিতে পারে। ব্লুম উইমেনস ক্লিনিকের সিনিয়র গাইনোকলজিস্ট ডঃ প্রিয়া আহুজা বলেন, “ব্রা যদি ঠিকঠাক সাপোর্ট না দেয়, তাহলে তা শরীরের গঠন, ভঙ্গিমা সব কিছুর উপরেই প্রভাব ফেলে।”
কী কী কারণে স্তন ক্যানসার হয়?
ডাক্তাররা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, স্তন ক্যানসারের প্রকৃত ঝুঁকিগুলির দিকে নজর দিন:
১. বয়স এবং আগে যদি পরিবারে কারও হয়
২. BRCA1/BRCA2 জিনের মিউটেশন
৩. অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু বা দেরিতে মেনোপজ
৪. স্থূলতা এবং কম চলাফেরা
৫. অ্যালকোহল সেবন
৬. হরমোন থেরাপি
আন্ডারওয়ায়ার ব্রা পরা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই— যদি তা আরামদায়ক হয়। কিন্তু যদি চামড়ায় দাগ ফেলে, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে বা অস্বস্তি হয়, তাহলে সেটি বদলে নেওয়াই ভাল। কারণ সেটা ক্যানসারের জন্য নয়, আপনার নিজের স্বস্তির জন্য। স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ার বদলে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলুন।